শক্তিমত্তা আর সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় কোপা আমেরিকার চলতি আসরের স্পষ্ট ফেভারিট ব্রাজিলের জয়রথ ছুটছেই। সর্বশেষ পেরুকে উড়িয়ে আসরে নিজেদের দ্বিতীয় ও টানা নবম জয় তুলে নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
কোপা আমেরিকার গ্রুপ ‘এ’-এর ম্যাচে শুক্রবার ৪-০ গোলে জিতেছে ব্রাজিল। রিও ডি জেনেরিওর এস্তাদিয়ো অলিম্পিকো নিল্টন সান্তোসে প্রথমার্ধে অ্যালেক্স সান্দ্রোর গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে আরও তিন গোল যোগ করেন নেইমার, এভারটন ও রিচার্লিসন। এর আগে আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে ভেনেজুয়েলাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে অভিযান শুরু করেছিল তিতের দল।
আজকের ম্যাচে ভেনেজুয়েলা ম্যাচের দলে ছয়টি পরিবর্তন আনেন ব্রাজিল কোচ। গোলরক্ষক হিসেবে লিভারপুলের আলিসনের জায়গায় আসেন ম্যানচেস্টার সিটির এদেরসন। রক্ষণে মার্কুইনো এবং লোদির জায়গায় থিয়াগো সিলভা ও অ্যালেক্স সান্দ্রো।
মিডফিল্ডে পাকুইতার জায়গায় নামেন এভারটন এবং গত ম্যাচে গোল করে নজর কাড়া গাবিও নামেন রিচার্লিসনের জায়গায়। খেলার শুরুতে ব্রাজিলকে রক্ষণের দেয়ালে আটকে রেখেছিল পেরু। কিন্তু দ্বাদশ মিনিটেই তাদের রক্ষণের দেয়াল ভেঙে ফেলেন সান্দ্রো।
এভারটনের প্রথম ক্রস অবশ্য বাধা পেয়ে ফিরেছিল, কিন্তু পেরুর ডিফেন্ডাররা পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে পারেননি। এই সুযোগে বল পেয়ে দূরের পোস্টের দিকে ছুটে যান গ্যাব্রিয়েল জেসুস। সেখানে সুযোগ পেয়েও নিজে শট না নিয়ে সান্দ্রোর দিকে পাঠিয়ে দেন ম্যানচেস্টার সিটির এই উইঙ্গার। আর দারুণ ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার।
গোল পাওয়ার পরও ব্রাজিল ঠিক স্বরূপে ছিল না। বরং মাঝমাঠ পর্যন্ত পেরু সেয়ানে সেয়ানে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু স্বাগতিকদের গোলরক্ষককে তেমন কোনো পরীক্ষাতেই ফেলতে পারছিল না পেরুভিয়ানরা। বরং বিরতির ঠিক আগে সান্দ্রোর সামনে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসে গিয়েছিল। নেইমারের বাড়িয়ে দেওয়া বল প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের ভেতরে পেয়ে শট নিয়েছিলেন জুভেন্টাসের ডিফেন্ডার। কিন্তু বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে চেনা ছন্দে দেখা যায় ব্রাজিলকে।
বিশেষ করে এভারটন সোয়ারেসকে বদলি হিসেবে এভারটন রিবেইরো এবং গ্যাব্রিয়েল বারবোসার জায়গায় রিচার্লিসন নামার পর ব্রাজিলের আক্রমণের ধার বেড়ে যায়। ৬৩তম মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে যায় ব্রাজিল। প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে তাপিয়ার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যান নেইমার। রেফারি শুরুতে পেনাল্টির বাঁশি বাজালেও পরে ভিএআর দেখে সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। ৬৮তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন নেইমার।
ফ্রেডের কাছ থেকে পোস্ট থেকে ২০ গজের মধ্যে বল পেয়ে যান পিএসজি ফরোয়ার্ড। সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা ঘুরে পেরুর গোলরক্ষককে পরাস্ত করে নিচু শটে দূরের কোণ দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। আর মাত্র ৯টি গোল করলেই ব্রাজিলের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি গোলের (৭৭টি) মালিক কিংবদন্তি পেলের রেকর্ডে ভাগ বসাবেন নেইমার।
৭৯তম মিনিটে ব্যবধান কমানোর সহজ সুযোগ পেয়েছিল পেরু। ফ্রি-কিক থেকে বল এসে পড়েছিল একদম পোস্টের সামনে। সেখানে থাকা ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ফ্যাবিনহোর নাগালের বাইরে গেলে মাত্র ছয় গজ দূর থেকে ক্রসবারের উপর দিয়ে মারেন পেরুর ভ্যালেরা।
এরপর কার্যত ব্রাজিল শো চলে। ৮৯তম মিনিটে নেইমারের সঙ্গে বল বিনিময়ের পর রিচার্লিসনের ক্রস থেকে বল পেয়ে ব্রাজিলের জার্সিতে নিজের প্রথম গোলের দেখা পান রিবেইরো। এরপর যোগ করা সময়ে পেরুর রক্ষণের জটলা থেকে নেওয়া ফিরমিনোর শট প্রতিহত হলে ফিরতি সুযোগ কাজে লাগান রিচার্লিসন। এই নিয়ে দুই ম্যাচের দুটিতেই জিতে গ্রুপের শীর্ষে আছে ব্রাজিল।
আসরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে হারের মুখ দেখা পেরু আছে পাঁচে। আগামী ২৩ জুন নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে ব্রাজিল।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।